‘প্রবৃদ্ধির সুষম বণ্টনই বড় চ্যালেঞ্জ’
অর্থনীতি ডেস্ক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। এ বছরই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা রাখি আমরা। শুধু প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেই হবে না। এই প্রবৃদ্ধির সুসম বণ্টন নিশ্চিত করাই হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
গতকাল শনিবার রাতে গভর্নরের ৩ দিনব্যাপী উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনে রংপুর সেনানিবাসের আর্মি মেডিকেল কলেজের ক্যাফেটোরিয়া প্রাঙ্গণে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের আর্থিক অঞ্চলভুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য লন্ডনভিত্তিক বিখ্যাত অর্থনৈতিক পত্রিকা ইউরো মানির ইমার্জিং মার্কেটের পক্ষ থেকে সম্প্রতি গভর্নর আতিউর রহমানকে ২০১৫ সালের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ গভর্নরের খেতাবে ভূষিত করা হয়। এ উপলক্ষে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে রংপুর ব্যাংকার্স ক্লাব।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রংপুর অফিসের নবনির্মিত গভর্নর গেস্ট হাউস, মেগা কনফারেন্স রুম, ই-লাইব্রেরি ও নারী উদ্যোক্তা ডেটাবেজ নামে একটি প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করেন গভর্নর।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের নীতি নির্ধারকদের উদ্দেশ্য করে গভর্নর বলেন, আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে যাই। উন্নয়নের ভাগ আমরা সবাইকে দিতে চাই। এর অংশ হিসেবেই আমরা উত্তরবঙ্গে এসেছি। মঙ্গাকবলিত রংপুরকে ইতিহাসের বিষয় করতে চাই। রংপুরের উন্নয়নে ইতোমধ্যে ২৩২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কানাডার দেওয়া অর্থে চাঁদা দিয়ে আইএমএফের সদস্য হয়েছিলাম আমরা। কারণ তখন আমাদের কাছে চাঁদা দেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে আমাদের রিজার্ভ প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার।
গভর্নর বলেন, এই রিজার্ভের মোকাবেলা করাটা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীতে ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক উন্নয়নের কৌশল নিয়ে এগিয়ে যেতে এই চ্যালেঞ্জ আমরা সানন্দে গ্রহণ করেছি। এতোদিন আমরা ঘাটতি মোকাবেলা করেছি, এখন উদ্বৃত্ত মোকাবেলা করছি।
দেশের মানুষ আয়-রোজগার করে ধনী হবে- এমন ভরসা পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভরসাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই ভরসার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। যাতে সাধারণ মানুষ নিজেরা পরিশ্রম করে তাদের ভাগ্য বদলাতে পারে। পাশে থেকে সহযোগিতা করবো আমরা। ব্যাংক অর্থ দেবে; আর প্রশাসন নিরাপত্তা দেবে। তবেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
শ্রেষ্ঠ গভর্নরের স্বীকৃতির বিষয়ে আতিউর রহমান বলেন, এ অর্জনের সবটুকুই আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতের আমার সহকর্মীরাই প্রাপ্য। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। ছোট দেশের ছোট্ট একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককের গভর্নর আমি। তাকে বিশ্ব পর্যায়ে নিয়ে পুরস্কৃত করা এটি কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। আপনারা ভালো কাজ করছেন বলেই বাংলাদেশ ব্যাংক এবং গভর্নর স্বিকৃতি পাচ্ছে; পুরস্কৃত হচ্ছে। এটি আমাদের সম্মিলিত সাফল্য।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান, রংপুর বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক খুরশিদ আলম প্রমুখ। এসময় সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/বিএ